Type Here to Get Search Results !

মোদির স্বপ্নের প্রকল্প থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন গ্রাহকরা । সোনার বাংলা পত্রিকা ।

 

সাধারণ মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অটল পেনশন যোজনা চালু করেছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের সেই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের জনপ্রিয়তাই এখন প্রশ্নচিহ্নের মুখে। এরাজ্যে অনেকটাই গতি হারিয়েছে যোজনাটি। এই প্রকল্পে যাঁরা টাকা রেখেছিলেন, তাঁদের অনেকেই তা আর চালিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন না। মাঝপথে প্রকল্প বন্ধ করে টাকা তুলে নিচ্ছেন গ্রাহকদের একাংশ। প্রকল্প বন্ধ করার হিড়িক আটকাতে এবার মাঠে নামতে বাধ্য হল সরকার। কেন গ্রাহকরা পেনশন যোজনা বন্ধ করছেন, তার কারণ জানতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। কী করলে প্রকল্পটি আরও গ্রহণযোগ্য হতে পারে, তার জন্য পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে প্রকল্প ছেড়ে যাওয়া গ্রাহকদের থেকেই।
কেন্দ্রের সাম্প্রতিকতম হিসেব বলছে, চলতি অর্থবর্ষে দেশে এখনও পর্যন্ত অটল পেনশন যোজনায় নাম লিখিয়েছেন ৬৫ লক্ষ গ্রাহক। গত অর্থবর্ষে তা ছিল ৮০ লক্ষ। পেনশন প্রকল্পটি দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে বাংলাতেও। তথ্য বলছে, গত অর্থবর্ষে এরাজ্যে এই কেন্দ্রীয় যোজনায় লগ্নি করেছিলেন ৭ লক্ষ ৫৯ হাজার গ্রাহক। শেষ তথ্য অনুযায়ী চলতি আর্থিক বছরের ডিসেম্বরের গোড়ায় তা পৌঁছেছে ৪ লক্ষ ৪৩ হাজারে। যদিও অর্থবর্ষ শেষ হয়নি, তবুও আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি তো দূরের কথা, গ্রাহক সংখ্যার নিরিখে পিছিয়ে রয়েছে বাংলা। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, যাঁরা নতুন করে অটল পেনশন যোজনার গ্রাহক হয়েছেন, শুধুমাত্র তাঁদের সংখ্যা বা তথ্যই সামনে আসছে। যাঁরা প্রকল্প ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তাঁদের হিসেব সামনে আসছে না। প্রতি মাসেই হাজার হাজার গ্রাহক কেন্দ্রের পেনশন যোজনা থেকে নাম তুলে নিচ্ছেন, এমনটাই বলছেন দপ্তরের কর্তারা।
এবার সেই সঙ্কট কাটাতেই কোমর বাঁধছে কেন্দ্র। অটল পেনশন যোজনার দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে পেনশন ফান্ড রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির উপর, যা একটি স্বশাসিত সংস্থা। কিন্তু প্রকল্প ছেড়ে গ্রাহকরা চলে যাচ্ছেন কেন, তা জানতে সমীক্ষা করছে কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই। অনলাইনে বা ফোনে সেই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। প্রশ্ন করা হচ্ছে, প্রকল্প ছাড়ার কারণ কি উপার্জন কম হওয়া, যে কারণে প্রকল্পে নিয়মিত টাকা দিতে সমস্যা হচ্ছে? নাকি প্রকল্পটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছচ্ছে না? গ্রাহক কি অন্য কোনও পেনশন স্কিম পছন্দ করছেন? নাকি তাঁরা এই পরিষেবায় সন্তুষ্ট নন? গ্রাহক যখন ব্যাঙ্কে পেনশন প্রকল্পটি বন্ধ করার ফর্ম পূরণ করছেন, তখন কি ব্যাঙ্কের কর্মীরা তাঁদের যোজনাটির সুবিধাগুলি সম্পর্কে আরও একবার অবহিত করেছেন? এটি চালানোর জন্য অন্য কোনওভাবে সুযোগ করে দেওয়া যায় কি না, সেই বিষয়ে কি ব্যাঙ্ক
তথ্য দিয়েছে? পাশাপাশি পেনশন প্রকল্পটি আরও ভালো করার জন্য পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে ছেড়ে যাওয়া গ্রাহকদের থেকে। 
কিন্তু এসব করেও জনপ্রিয়তা ধরে রাখা যাবে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ, এই প্রকল্পে সর্বাধিক পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত পেনশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের হিসেব অনুযায়ী, কোনও গ্রাহক যদি ১৮ বছর বয়সে এই স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হন এবং প্রতি মাসে ২১০ টাকা করে জমা করেন, তাহলে একটানা ৪২ বছর ধরে সেই টাকা জমা করলে ৬০ বছর বয়সে তিনি পাঁচ হাজার টাকা করে পেনশন পাবেন। যেভাবে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, তাতে ৪২ বছর পর পাঁচ হাজার টাকার মূল্য কতটা থাকবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকেই। পাশাপাশি এই স্কিমে সরকার বাড়তি কোনও সুবিধা দেবে না। কোনও মাসে টাকা জমা করতে না পারলে জরিমানার মুখে পড়তে হবে গ্রাহককে। যেখানে অধিকাংশ মানুষের হাতেই নগদ টাকা বাড়ন্ত, সেখানে এই স্কিম চালিয়ে নিয়ে যাওয়াকেই বিলাসিতা মনে করছেন অনেকে। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

সোনার বাংলা পত্রিকা